ঢাকা,   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

The South Asian Times | সাউথ এশিয়ান টাইমস

তিন মাস বেতন নেই এফডিসি কর্মীদের, নিশ্চুপ এমডি!

বিনোদন রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০:২১, ৬ এপ্রিল ২০২৩

তিন মাস বেতন নেই এফডিসি কর্মীদের, নিশ্চুপ এমডি!

ঢাকাই সিনেমার প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) দুরবস্থার চিত্র আরও প্রকট আকারে দেখা দিলো। গেলো তিন মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না প্রতিষ্ঠানটির কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফলে আর্থিক সংকট আর টানাপড়েনে দিন কাটছে তাদের।

বারংবার কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানালেও সাড়া পাছেন না কর্মীরা। তাই নিরুপায় হয়ে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনে নামেন তারা। এ সময় এফডিসির ২২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়ো হয়ে তাদের বেতনের দাবি তোলেন, স্লোগান দেন। এরপর সবাই দলবদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুজহাত ইয়াসমিনের কার্যালয়ে যান। তার কাছে জমা দেন বেতন-ভাতার দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি।

এরপর বিষয়টি নিয়ে এফডিসির কলাকুশলী ও কর্মচারী শ্রমিকলীগের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বেতনর দাবি নিয়ে আমরা এমডিকে স্বারকলিপি দিয়েছি। তিনি আমাদের পক্ষে আছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটা বিহিত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।’

গণমাধ্যমকে নিজেদের দুরবস্থার কথা জানাচ্ছিলেন এফডিসির কলাকুশলী ও কর্মচারী শ্রমিকলীগের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব

বলা জরুরি, এফডিসি হলো সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন সরকারের পক্ষ থেকেই আসে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান হলেও এর বেতন-ভাতা আসে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। কিছু দিন আগে সেখান থেকে আসা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, নিজস্ব আয় দিয়ে চলতে। এতেই বিপাকে পড়েন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। কারণ বহু বছর ধরেই এফডিসির আয়-রোজগারের অবস্থা নাজুক।

এদিকে এমন দুরবস্থার মধ্যেও নির্বিকার-নিশ্চুপ রয়েছেন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন। কর্মীদের আন্দোলনের সময় নিজ অফিস কক্ষে থাকলেও গণমাধ্যমের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে রাজি হননি। এছাড়া মুঠোফোনে কল দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

অগত্যা এফডিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রি বড়ুয়ার দ্বারস্থ হতে হলো। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘এমডি থেকে একেবারে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সবার বেতন বন্ধ। এখন এমডি স্যার কী করবেন, তার তো হাত-পা বাঁধা। তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন, কিন্তু তারা টাকা দেয়নি।’

 

গত ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস প্রসঙ্গে এক আলাপে হিমাদ্রি বড়ুয়া জানান, বর্তমান সময়ে এফডিসির মাসিক আয় ৪০-৪৫ লাখ টাকা। সে তথ্যটির রেশ টানলে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই টাকা দিয়ে তো আমাদের সবার বেতন হবে না। এফডিসির মাসে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো খরচ। আমরা অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আনার জন্য। কিন্তু তারা সাড়া দিচ্ছেন না।’

আন্দোলনের মাঝে কর্মীরা জানান, বেতন-ভাতা না হওয়ার কারণে রমজান মাসে ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করতে পারছেন না তারা। কেউ কেউ শুধু পানি খেয়েও রোজা রাখছেন। কেউ ইফতারের জন্য খেজুর অব্দি কিনতে পারছেন না। ঘনিয়ে আসছে ঈদ। এর আগে বেতন-ভাতার সংকট না কাটলে আনন্দ তো দূরের কথা, ঈদ তাদের কাছে আক্ষেপ ও দীর্ঘশ্বাসের কারণ হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ

Advertisement

সর্বাধিক জনপ্রিয়