
নিবিড় অরণ্য। গাছের ডালে পাতার ফাঁকে ফাঁকে সোনালি বানর। শিশুকে কোলে নিয়ে ঘুরছে মা বানর। কোথাও তাদের ভয় নেই। কারণ এটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
হুবেই প্রদেশের শ্যননংচিয়া ফরেস্ট্রি জেলা। পাহাড়ী অরণভূমি। এখানে গাছে গাছে দোল খায় সোনালি বানরের দল। পরিবেশ সংরক্ষণমূলক কাজের ফলে এই অরণ্যে বাড়ছে সোনালি বানরের সংখ্যা।
এই অরণ্যে এক হাজার ৬১৮ টি বানর রয়েছে। ওরা ১১টি দলে বিভক্ত। পাঁচ বছর আগের জরীপে বানরের যে সংখ্যা ছিল এখন তার চেয়ে ১৪৭টি বানর বেশি রয়েছে।
এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে বানর বিষয়ে একটি জরীপ হয়েছে। দেখা গেছে, বানরদের বিচরণক্ষেত্র ৪০১ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে রয়েছে।
শ্যননংচিয়া ন্যাশনাল পার্ক প্রশাসনের বিজ্ঞান গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ইয়াং চিংইয়ুয়ান জানান, তারা অনুমান করেছিলেন যে বানরদের সম্ভাবনাময় বিচরণ এলাকা ৩০০ বর্গ কিলোমিটার ছাড়িয়েছে। জরিপে ভুল এবং ডুপ্লিকেশন এড়াতে তারা এলাকাটিকে কয়েকটি গ্রিডে ভাগ করেন। প্রতিটি গ্রিডে সময় নির্ধারণ করেন। এই জরীপে অনেক মানুষ অংশ নিয়েছেন।
২৪০টি সার্ভে রুট অনুসরণ করা হয়।
শ্যননংচিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের ফ্ল্যাগশিপ স্পিসিস হলো গোল্ডেন মাংকি। ১৬০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় পাহাড়ি বনভূমিতে এরা বাস করে। ফুল, ফল, লতাপাতা ও গাছের বাকল এদের প্রধান খাদ্য।
পুরুষ সোনালি বানর আকারে মেয়ে বানরের চেয়ে অনেক বড় হয়। শিশু অবস্থায় গায়ের রং থাকে তামাটে। বড় হয়ে সোনালি রঙ ধারণ করে।
চীনা বন একাডেমির, ইন্সটিটিউট অব ফরেস্ট ইকোলজির পরিবেশ ও সুরক্ষা বিষয়ক প্রধান বিজ্ঞানী, লি তিছিয়াং জানান এবারই প্রথম ইনফ্রারেড সেনসিং ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে যেন গণনা সঠিক হয়, এবং প্রতিটি সোনালি বানরকে গণনা করা যায়।
১৯৯০ এর দশকে এই অরণ্যে মাত্র ১৬৪ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ৫০১টি সোনালি বানর বাস করতো। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষামূলক অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বানরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ২০০৫ সালে ১৮৯ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১২৮২টি বানর ছিল। ২০১৯ সালে ৩৫৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১৪৭১টি বানর বাস করতো। আর সাম্প্রতিক জরিপে তাদের সংখ্যা ১৬১৮।
চীনের পরিবেশ সংরক্ষণমূলক কাজ, গবেষক ও প্রকৃতি কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বাড়ছে সোনালি বানরের সংখ্যা। প্রকৃতির কোলে ফিরে আসছে প্রকৃতির এই সোনালি সন্তান।